শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৪৮ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

‘১০ বছরের পরিকল্পনা নিয়ে এগুতে হবে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে’

রোহিঙ্গা ফাইল ছবি

ভয়েস নিউজ ডেস্ক:

আগামী ১০ বছরের মধ্যে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের সম্ভাবনা নেই। তাই বাংলাদেশকে আগামী ১০ বছরের সমন্বিত পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করতে হবে। পরিকল্পনা এমন হতে হবে ১০ বছর পর বাংলাদেশ যা চায় তা যেন বাস্তবায়িত হয়। রোহিঙ্গা সংকট সংক্রান্ত সবগুলো বৈশ্বিক বৈঠকে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ কী চায় এবং সংকট সমাধানে প্রয়োজনে বাংলাদেশ কেমন বিকল্প ব্যবস্থায় যেতে পারে তা শক্তভাবে তুলে ধরতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ঢাকা মিশন থেকে ‘যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য এবং জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার’র যৌথ সংবাদ বিবৃতি’ শীর্ষক বার্তায় জানানো হয়, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থী ও আশ্রয়দানকারী দেশগুলোর জন্য সহায়তা উৎসাহিত করতে আগামী ২২ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা যৌথভাবে দাতা সংস্থাসমূহের অংশগ্রহণে একটি সম্মেলনের আয়োজন করবে। রোহিঙ্গা শরণার্থী, আশ্রয়দানকারী জনগোষ্ঠী এবং মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বাস্তুহারা জনগোষ্ঠীকে সহায়তার লক্ষ্যে অতি জরুরি এই অর্থায়ন দেওয়ার জন্য যৌথ আয়োজকেরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান জানাবে। আগামী ২২ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনের লক্ষ্য হলো নিজ ভূমি মায়ানমারের অভ্যন্তরে বা বাইরে অবস্থানরত নাজুক ও বাস্তুহারা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় জরুরি তহবিল গঠন।’

আগামী ২২ অক্টোবরের বৈঠক সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘ওই বৈঠক সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চেয়েছি যে তারা কী আলাপ করতে চায়। শুনতে পেলাম তারা ফেইজ ওয়াইজ, আগামী ১০ বছরের পরিকল্পনা নিয়ে আলাপ করতে চান। ওনারা বলছেন যে, মাল্টি ইয়ার প্লানিং কিন্তু এটাতে আমরা নেই। ওনারা বলছেন যে রিজিওনাল কান্ট্রি ওদের (রোহিঙ্গাদের) শেল্টার দেবে কিন্তু আমরা মনে করি এটা এই অঞ্চলের একার দায়িত্ব না, এটা বৈশ্বিক দায়িত্ব, এটা গোটা বিশ্বের দায়িত্ব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের প্রধান লক্ষ্য মানবিক সহায়তা নয়, প্রত্যাবাসন। এটা এই অঞ্চলের একার দায়িত্ব না, এটা বৈশ্বিক দায়িত্ব।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন আরও বলেন, ‘ঢাকায় নিযুক্ত চীনের দূতের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। প্রত্যাবাসন শুরু না হওয়ায় চীন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বেইজিংয়ে তিনমন্ত্রীর বৈঠক হতে পারে কিনা এই বিষয়ে চীনের দূত বলেছেন যে তিনি তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করবেন।’

রোহিঙ্গা ইস্যুতে আগামী ২২ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার যৌথ সম্মেলন এবং বেইজিংয়ে তিন দেশের মন্ত্রীদের বৈঠকে বাংলাদেশের অবস্থান কেমন হওয়া উচিত, এই বিষয়ে সারাবাংলা ডটনেটের পক্ষ থেকে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন, নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগে. জেনা. (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক সাহাব এনাম খানের মন্তব্য জানতে চাইলে তিনজনই মন্তব্য করেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশকে ১০ থেকে ১৫ বছরের রোডম্যাপ নিয়ে কাজ করা উচিত। এর জন্য সমন্বিত পরিকল্পনা করতে হবে, যেখানে একাধিক প্ল্যান থাকবে এবং এমনভাবে বাস্তবায়নের পথে যাওয়া প্রয়োজন যাতে নির্দষ্ট সময় শেষে বাংলাদেশ যা চায় তা হয়।’

তৌহিদ হোসেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট সংক্রান্ত সকল বৈশ্বিক ফোরামে বাংলাদেশের অংশ নেওয়া প্রয়োজন। এসব বৈঠকে বাংলাদেশের অবস্থান শক্তভাবে তুলে ধরতে হবে। নিজেদের স্বার্থের বিপরীতে এসব বৈঠকে চাপ আসলে তা গ্রহণ করা যাবে না। রোহিঙ্গা সংকটের কারণে আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়টি এসব বৈঠকে বাংলাদেশকে বারবার তথ্য-উপাত্তসহ তুলে ধরতে হবে।’

এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার মনোভাব মিয়ানমারের মধ্যে নেই। অন্যদিকে, ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল, বেল্ট এন্ড রোড বাস্তবায়ন, কোয়াড বাস্তবায়ন, এসব উদ্যোগের ফলে মিয়ানমার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বৈশ্বিক সমর্থন ও সহযোগিতা পাচ্ছে। নিজেদের স্বার্থে জাপান, ভারত, চীন সরাসরি মিয়ানমারে বড় বড় অঙ্কের প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। তাই বাংলাদেশকে তার নিজের স্বার্থ নিজেরই উদ্ধার করতে হবে। এজন্য বাংলাদেশকে বিকল্প ভাবনা ভাবতে হবে এবং শক্ত সামর্থ্য অর্জন করে তা বৈশ্বিক অঙ্গণে তুলে ধরতে হবে।’

অধ্যাপক সাহাব এনাম খান বলেন, ‘মিয়ানমারকে ভারত সামরিক সরঞ্জাম দিচ্ছে। প্রতিবেশিদের সঙ্গে আমাদের সমুদ্র সীমা বিরোধ বন্ধুত্বের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়নি, আর্ন্তজাতিক কোর্টে যেতে হয়েছে। এই বার্তাগুলো বুঝতে হবে। শুধুমাত্র পলিটিকেল এবং ডিপ্লোমেসি এনগেজমেন্ট দিয়ে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান হবে না। এ জন্য আমাদের নিজস্ব ক্যাপাসিটি বাড়াতে হবে এবং ক্যাপাবল ডিপ্লোমেসি করতে হবে।’ সূত্র:সারাবাংলা।

ভয়েস/জেইউ।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION